Skip to main content

ধরা খেয়ে, মাথার চুল ছিঁড়ে লাইফে যে জিনিসগুলো শিখতে হয় সেগুলা শেখানোর আগ্রহ নাই ভার্সিটিগুলোর ...


এখন থেকে ভার্সিটিতে নিচের কোর্সগুলো থাকা উচিত।

১. মানুষ চেনার -- ২ ক্রেডিট:
কে ব্যাক বাইটার, কে চাটুকার, কে আলতো পিনচার, কে টিপ্পনি কাটার, কে ভ্রু কুচকার, আর কে কে ক্রেডিট থিপ (অর্থাৎ তোমার ক্রেডিট তার নিজের বলে চালিয়ে দিবে) এই জিনিসগুলোই শিখানো হবে একদম প্রথম সেমিস্টারে। তাহলেই লাইফের ৭০% ক্যাঁচাল দূর হয়ে যাবে। আর অল্পতেই বুঝে ফেলবে- আশেপাশের কে সত্যিকারের মানুষ আর কে সামনে ময়ূর পিছনে পেঁচা।

২. পার্সোনাল ফাইন্যান্স -- ৩ ক্রেডিট :
ভার্সিটি লাইফে যত টাকা উপার্জন করো না কেন তার মিনিমাম ২০% সেইভ করতে হবে। আলাদা ব্যাংক একাউন্ট খুলে। এছাড়াও ভালো একটা ল্যাপটপ বা স্পেশাল কিছু করার জন্য আলাদাভাবে কিভাবে টাকা সেইভ করবে। আবার আরেকজনের বিলাসিতার সাথে টক্কর দিতে গিয়ে টাকা ধার করে দামি মোবাইল কিনে, সেই মোবাইল ছিনতাইকারীর কাছে গচ্ছা দিয়ে কান্নাকাটি করার সময় কিভাবে বসুন্ধরা টিস্যু দিয়ে চোখ মুছবে সেই সিস্টেম শিখানো হবে এই কোর্সে। আর এইগুলা ছাড়াও কাজের একটা জিনিস শিখবে। সেটা হচ্ছে-- কেউ টাকা ধার চাইতে আসলে, তার ধার চাওয়ার আগেই উল্টা তার কাছে টাকা ধার চেয়ে বসার টেকনিক।

৩. ইমোশন ম্যানেজমেন্ট -- ৪ ক্রেডিট:
এই কোর্স ফার্স্ট সেমিস্টারে হলে, এইটাতে থাকবে -- কিভাবে হৃদয় মোচড় দেয়া পাখিকে 🥰--
ধরি মাছ না ছুঁই পানি স্টাইলে এপ্রোচ করতে হয় ।
আর সেকেন্ড সেমিস্টারে হলে সিলেবাসের মেইন ফোকাস হবে --
আমাদের রিলেশন এর ফিউচার নাই বলে আরেকজনের সাথে চামে লাইন মারা পাবলিকের কাছ থেকে সিরিয়াস বিট্রে খাওয়ার পর ইমোশনাল ধকল থেকে নিজেকে কন্ট্রোল করার উপায়। কিংবা মেন্টাল হেলথ রিলেটেড টাফ টাইমগুলা কিভাবে ম্যানেজ করতে হয়, হেল্প লাগলে কার কাছে যেতে হয় সেই রিলেটেড টেকনিক।

তবে এগুলা ছাড়াও কাজের জিনিসও থাকবে। এই যেমন, অন্যজনের কাছ থেকে চ্যাঁকা খেয়ে আসা পাবলিকরে স্বান্ত্বনা দেয়ার উছিলায় নিজের বড়শির টোপ গেলানোর এক ডজন উপায়।

৪. লিডারশিপ/পিপল ম্যানেজমেন্ট-- ২ ক্রেডিট:
অপরিচিত মানুষকে এপ্রোচ করতে পারা। তাদের সাথে এক সাথে কাজ করা। কিংবা তাদেরকে লিড করতে পারা। এক একজনের সাইকোলজি বুঝে তাকে সিস্টেম করে তার ভিতর থেকে কাজ বের করে নিয়ে আসার টেকনিক জানা খুবই জরুরি। এইটা শুধু ভার্সিটির ট্যুর, ইভেন্ট ম্যানেজ, প্রজেক্ট ম্যানেজেমেন্ট বা বাজেটিং এর ক্ষেত্রেই না বরং প্রফেশনাল লাইফে ম্যানেজার বা প্রজেক্ট লিড করতে অনেক হেল্প করে। আর এটা ছাড়াও কাজের একটা জিনিস শেখানো হবে।
সেটা হচ্ছে --
কিভাবে কোন অর্গানাইজেশনের কমিটি গঠন করার এক সপ্তাহে আগে খুব নিবেদিত ভাব দেখিয়ে জেনারেল সেক্রেটারি এর পদ দখল করে লাপাত্তা হয়ে যাওয়া যায় পাঁচ টেকনিক।

৫. স্ট্রেস/হার্ডটাইম ম্যানেজমেন্ট - ১ ক্রেডিট:
লাইফে হার্ড টাইম আসবে । পরীক্ষায় ফেল করবে ।
অন্যরা জোর করে মাইনকা চিপায় ফেলে দিবে । তোমার নামে প্রমাণসহ মিথ্যা কথা বলে বসবে ।
পার্সোনাল মেটার নিয়ে তোমাকে শুনিয়ে শুনিয়ে কানাঘুষা করবে। এসব নিয়ে না চাইতেও স্ট্রেসে পড়ে যাবে। অনিচ্ছা স্বত্ত্বেও কনফ্লিক্ট এ পড়বে। বিনা কারণেই ফ্যামিলির সাথে ঝগড়া বেঁধে যাবে। এসব সিচুয়েশন হ্যান্ডেল করার, সঠিক কাজকে প্রায়রিটি দেয়ার, ফাও কথাকে এক কান দিয়ে শুনে অন্য কান দিয়ে বের দেয়ার জিনিসগুলো শিখিয়ে দিতে পারলে --
লাইফ প্যারাহীন হয়ে উঠবে।

৬. চাকরি/ক্যারিয়ার -- ২ ক্রেডিট:
চাকরিতে কিভাবে এপ্লাই করবে? কোন কোন স্কিল বা নলেজ থাকলে সবচেয়ে ভালো চাকরিটা পাওয়া যাবে? কাকে দিয়ে সিস্টেম করে সিভিটা জায়গামতো পৌঁছানো যাবে। কিংবা কিভাবে উত্তর দিলে চাকরিটা পেয়ে যাবে। চাকরি পাওয়ার পর সেখানের জব রেস্পন্সিবিলিটি কিভাবে হ্যান্ডেল করবে ।
এইসব জিনিস শেখানো হবে এই কোর্সে।
আর এগুলা ছাড়াও একটা প্রাকটিক্যাল জিনিস শিখাবে ।
সেটা হচ্ছে-- চাকরি করতে না চাইলে কিভাবে বড়লোক শ্বশুর দেখে ঝোপ বুঝে কোপ মারতে হয়।

৭. বেসিক কমিউনিকেশন স্কিল -- ১ ক্রেডিট:
কমিউনিকেশন স্কিল ছাড়া লাইফে কিছু করা যায় না । চাকরিতে সফল হওয়া যায় না ।
অথচ ভার্সিটিতে বিশাল বিশাল থিওরি পড়িয়ে ফেলে কিন্তু কমিউনিকেশন নিয়ে একটুও কথা বলে না । স্পেশালি ইঞ্জিনিয়ারিং এর সাবজেক্টগুলাতে ।
Email etiquette, নেটওয়ার্কিং, প্রেজেন্টেশন স্কিল, নিগোসিয়েশনে স্কিল এর কিছু জিনিস ভার্সিটি লাইফে শেখানো উচিত।
আর এইগুলা ছাড়াও একটা কাজের জিনিস শেখানো উচিত।
সেটা হচ্ছে-- পরিচিত স্পেশাল মানুষকে অপরিচিত ফেইক প্রোফাইল খুলে চ্যাট চালাচালি করে তারপর রিয়েল লাইফ এর প্রেমে ফেলে ডেটিংয়ে যাওয়ার টিপস।

৮. ক্যারিয়াস সুইচ। মেজর চেইঞ্জ। প্যাশন চেইজ- ২ ক্রেডিট।
যেই সাবজেক্টে ভর্তি হইছো : সেটা হোক বাপ-মা এর ইচ্ছায় কিংবা ভর্তি পরীক্ষার মার্কসের ইচ্ছায় --
সেটা যে কারণেই হোক না কেনো, আজীবন যে সেটা নিয়েই পড়ে থাকতে হবে । এমন যে কোন কথা নাই--সেটাই বলে দিবে এই কোর্সের ফ্যাকাল্টিরা ..
অন্য কিছুতে প্যাশন থাকলে, ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের কেউ যে গায়ক হতে পারে ।
টেক্সটাইলের কেউ যে প্রোগ্রামার হতে পারে, একাউন্টিং এর কেউ যে গ্রাফিক ডিজাইনার হতে পারে সেই চিন্তারধারার দ্বারগুলো খুলে দিবে এই কোর্স।

৯. নিজেকে চেনার-- ৩ ক্রেডিট:
দুনিয়াতে সবচেয়ে কঠিন কাজ নিজেকে চেনা । নিজের মনকে চেনা ।
আমি কি চাই । আমার মন কি চায়।
আমার প্যাশন কি । আমার ড্রিম কি ।
সেটা বুঝতে পারাটা বিশাল একটা ঝামেলা ।
অল্প সময়ের মধ্যে নিজের টার্গেট ঠিক রাখা। নিজের পার্সোনাল গ্রোথ, মেন্টাল গ্রোথ, প্রফেশনাল গ্রোথ এর রাস্তাটা চালু রাখার সিস্টেম, টেকনিক শেখানো হবে এই কোর্সে।

১০. লেগে থাকার--১ ক্রেডিট:
দাঁত কামড়ে পরে থাকার ।
লেগে থাকার ।
হার্ড ওয়ার্ক করার। কোন কিছুতে বার বার হেরে গিয়েও ছেড়ে না দেয়ার।
হাজারো ডিস্ট্রাকশনের এই যুগে লেগে থাকার, ফোকাস রাখার, এটেনশন ধরে রাখার উপরে ১ ক্রেডিট থাকা উচিত।


Written By -